
রহমান মৃধা

বাংলাদেশের রাজনীতির পুরনো ত্রিভুজের ভাঙন থেকে কি জন্ম নিচ্ছে নতুন বাস্তবতা?
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এক অদ্ভুত ত্রিভুজ—আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামায়াত। কখনো সরাসরি, কখনো মুখোমুখি সংঘাত, কখনো আঁতাত—এই ত্রিভুজই ছিল ক্ষমতার মূল অঙ্ক। কিন্তু সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থান—দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও কেন্দ্রীয় ক্ষমতার দমবন্ধ বাস্তবতায় এই তিন কোণই আজ ভেঙে পড়ছে। প্রশ্ন উঠছে—সবকিছু কি তাহলে শেষ? নাকি ভাঙনের ভেতর দিয়েই নতুন ভোরের সূচনা হচ্ছে?
পুরনো ত্রিভুজের ভাঙন
আওয়ামী লীগ: গণঅভ্যুত্থানের চাপে দলীয় ঘাঁটি ভেঙে পড়লেও তৃণমূল পর্যায়ে তাদের শিকড় এখনো টিকে আছে। পতনের ভেতর থেকেই কি জন্ম নেবে দুর্নীতিমুক্ত, নতুন এক নবজাগরণ?
বিএনপি: দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের দায়ে পতন ঘটলেও, আত্মসমালোচনার পথ খুঁজে পেলে মধ্যবিত্তের আস্থার জায়গায় ফেরার সম্ভাবনা তাদের রয়ে গেছে।
জামায়াত-শিবির: অতীতের সহিংসতার দায়ে তারা জনগণের চোখে প্রত্যাখ্যাত ছিল। তবে ২০২৪-এর স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর জনগণের মধ্যে কিছু সাড়া তৈরি হলেও, প্রভাব ও জনভিত্তি উভয় দিক থেকেই তারা আসলে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ‘সবকিছু জামায়াত ঘটিয়েছে’—এমন ধারণা ছড়ালেও বাস্তবে তাদের শক্তি খরচ হচ্ছে।
নতুন আলো: এনসিপি ও বিকেন্দ্রীকরণ
ত্রিভুজ রাজনীতির বাইরে উঠে আসা একটি নতুন নাম—জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এটি কেবল একটি দলীয় প্রকল্প নয়, বরং জাতীয় প্রয়োজন থেকে উঠে আসা এক বিকল্প পথনকশা। রাজনীতি যদি সত্যিই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পথে এগোয়, তবে এটি ভবিষ্যতের বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক মেরুদণ্ড হতে পারে।
জনগণের মনস্তত্ত্ব: ক্ষোভ থেকে বিকল্প
গণঅভ্যুত্থানের পর রাস্তায় শোনা গেছে এক স্লোগান: ‘আমরা রক্ত দিলাম, প্রতিদান পেলাম দুর্নীতি।’ এই ক্ষোভই জন্ম দিচ্ছে বিকল্প রাজনৈতিক কাঠামোর দাবি। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম আর পুরনো দলের ছায়াতলে ফিরতে রাজি নয়। তারা চায় স্বচ্ছ নেতৃত্ব, বিকেন্দ্রীকৃত ক্ষমতা আর নীতিভিত্তিক রাজনীতি।
নতুন ত্রিভুজ: এক রাজনৈতিক ক্যালকুলাস
পুরনো ত্রিভুজের জায়গায় জন্ম নিচ্ছে এক নতুন ত্রিভুজ—গণআন্দোলন–বিকেন্দ্রীকরণ–তরুণ প্রজন্ম।
এই তিন কোণের ওপর দাঁড়িয়েই গড়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশে যেমন নেপালে রাজতন্ত্র ভেঙে নতুন রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হয়েছিল। কিংবা শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর নতুন নেতৃত্বের উত্থান ঘটেছিল—বাংলাদেশও কি সেই একই মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে? তুলনাগুলো স্পষ্ট করছে যে, পুরনো ক্ষমতার ছক ভাঙা গেলেও স্থায়ী সমাধান নির্ভর করে টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ওপর।
অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা
রাজনীতি কেবল নেতৃত্ব পাল্টানোর খেলা নয়—এটি মানুষের জীবনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনার প্রশ্ন। গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণ বিশেষত এই মৌলিক চাহিদাগুলোর বাস্তবায়ন দেখতে চায়।
উপসংহার
ত্রিভুজ ভেঙে পড়েনি—শুধু আকৃতি পাল্টেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের স্থান নিচ্ছে জনগণের স্বপ্ন, তরুণদের নেতৃত্ব আর বিকেন্দ্রীকৃত ক্ষমতার নতুন কাঠামো। তবে এই ভোরকে টেকসই করতে হলে দরকার হবে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সুশাসন এবং জনগণের প্রতি নিরবচ্ছিন্ন জবাবদিহি। এটিই হতে পারে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সত্যিকারের চমকপ্রদ ভিন্নমত—পতনের ভেতর থেকেই জন্ম নিচ্ছে নতুন ভোর।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
*লেখক সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। ইমেইল: [email protected]

বাংলাদেশের রাজনীতির পুরনো ত্রিভুজের ভাঙন থেকে কি জন্ম নিচ্ছে নতুন বাস্তবতা?
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এক অদ্ভুত ত্রিভুজ—আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জামায়াত। কখনো সরাসরি, কখনো মুখোমুখি সংঘাত, কখনো আঁতাত—এই ত্রিভুজই ছিল ক্ষমতার মূল অঙ্ক। কিন্তু সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থান—দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও কেন্দ্রীয় ক্ষমতার দমবন্ধ বাস্তবতায় এই তিন কোণই আজ ভেঙে পড়ছে। প্রশ্ন উঠছে—সবকিছু কি তাহলে শেষ? নাকি ভাঙনের ভেতর দিয়েই নতুন ভোরের সূচনা হচ্ছে?
পুরনো ত্রিভুজের ভাঙন
আওয়ামী লীগ: গণঅভ্যুত্থানের চাপে দলীয় ঘাঁটি ভেঙে পড়লেও তৃণমূল পর্যায়ে তাদের শিকড় এখনো টিকে আছে। পতনের ভেতর থেকেই কি জন্ম নেবে দুর্নীতিমুক্ত, নতুন এক নবজাগরণ?
বিএনপি: দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের দায়ে পতন ঘটলেও, আত্মসমালোচনার পথ খুঁজে পেলে মধ্যবিত্তের আস্থার জায়গায় ফেরার সম্ভাবনা তাদের রয়ে গেছে।
জামায়াত-শিবির: অতীতের সহিংসতার দায়ে তারা জনগণের চোখে প্রত্যাখ্যাত ছিল। তবে ২০২৪-এর স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর জনগণের মধ্যে কিছু সাড়া তৈরি হলেও, প্রভাব ও জনভিত্তি উভয় দিক থেকেই তারা আসলে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ‘সবকিছু জামায়াত ঘটিয়েছে’—এমন ধারণা ছড়ালেও বাস্তবে তাদের শক্তি খরচ হচ্ছে।
নতুন আলো: এনসিপি ও বিকেন্দ্রীকরণ
ত্রিভুজ রাজনীতির বাইরে উঠে আসা একটি নতুন নাম—জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এটি কেবল একটি দলীয় প্রকল্প নয়, বরং জাতীয় প্রয়োজন থেকে উঠে আসা এক বিকল্প পথনকশা। রাজনীতি যদি সত্যিই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পথে এগোয়, তবে এটি ভবিষ্যতের বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক মেরুদণ্ড হতে পারে।
জনগণের মনস্তত্ত্ব: ক্ষোভ থেকে বিকল্প
গণঅভ্যুত্থানের পর রাস্তায় শোনা গেছে এক স্লোগান: ‘আমরা রক্ত দিলাম, প্রতিদান পেলাম দুর্নীতি।’ এই ক্ষোভই জন্ম দিচ্ছে বিকল্প রাজনৈতিক কাঠামোর দাবি। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম আর পুরনো দলের ছায়াতলে ফিরতে রাজি নয়। তারা চায় স্বচ্ছ নেতৃত্ব, বিকেন্দ্রীকৃত ক্ষমতা আর নীতিভিত্তিক রাজনীতি।
নতুন ত্রিভুজ: এক রাজনৈতিক ক্যালকুলাস
পুরনো ত্রিভুজের জায়গায় জন্ম নিচ্ছে এক নতুন ত্রিভুজ—গণআন্দোলন–বিকেন্দ্রীকরণ–তরুণ প্রজন্ম।
এই তিন কোণের ওপর দাঁড়িয়েই গড়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশে যেমন নেপালে রাজতন্ত্র ভেঙে নতুন রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হয়েছিল। কিংবা শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর নতুন নেতৃত্বের উত্থান ঘটেছিল—বাংলাদেশও কি সেই একই মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে? তুলনাগুলো স্পষ্ট করছে যে, পুরনো ক্ষমতার ছক ভাঙা গেলেও স্থায়ী সমাধান নির্ভর করে টেকসই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ওপর।
অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা
রাজনীতি কেবল নেতৃত্ব পাল্টানোর খেলা নয়—এটি মানুষের জীবনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনার প্রশ্ন। গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণ বিশেষত এই মৌলিক চাহিদাগুলোর বাস্তবায়ন দেখতে চায়।
উপসংহার
ত্রিভুজ ভেঙে পড়েনি—শুধু আকৃতি পাল্টেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের স্থান নিচ্ছে জনগণের স্বপ্ন, তরুণদের নেতৃত্ব আর বিকেন্দ্রীকৃত ক্ষমতার নতুন কাঠামো। তবে এই ভোরকে টেকসই করতে হলে দরকার হবে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সুশাসন এবং জনগণের প্রতি নিরবচ্ছিন্ন জবাবদিহি। এটিই হতে পারে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সত্যিকারের চমকপ্রদ ভিন্নমত—পতনের ভেতর থেকেই জন্ম নিচ্ছে নতুন ভোর।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
*লেখক সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। ইমেইল: [email protected]
জবাবদিহিতা ছাড়া কোনো সংস্কার সফল হবে না। যেকোনো অনিয়ম প্রকাশ পেলে দ্রুত তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি এবং বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এগুলো শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং এক ধরনের মানসিক বার্তাও তৈরি করে যে অপরাধী রেহাই পায় না। বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে লুটপাটের প্রধান শক্তি ছিল বিচারহীনতা।
১৯২০-এর দশকে ইউরোপ তখন যুদ্ধ-পরবর্তী অস্থিরতায় কাঁপছে। আইফেল টাওয়ার তখনো এতটা জনপ্রিয় নয়। রক্ষণাবেক্ষণে খরচ বাড়ছে, আর শহরে গুজব—টাওয়ারটা নাকি ভেঙে ফেলা হতে পারে। এই সুযোগটাই কাজে লাগালেন বিশ্বখ্যাত প্রতারক ভিক্টর লাস্টিগ।
এই সময় আমরা যে প্রার্থনায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তা কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়। এটি এক মানবিক আবেদন, জীবনের বহু ঝড় অতিক্রম করা এক নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। জিয়া পরিবারের প্রতি দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই এবং চিকিৎসা সেবায় যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানাই, যারা নিরলসভাবে কাজ করছেন।
গামা আব্দুল কাদির সুদীর্ঘ প্রবাস জীবনে বাংলাদেশ অ্যাসেসিয়েশনের পাচঁবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি এখনো এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ, অস্ট্রেলিয়া এবং আওয়ামী লীগের অস্ট্রেলিয়া শাখারও প্রধান উপদেষ্টা।