logo
খবর

অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ উপদেষ্টার সমালোচনা সাবেক সচিবের

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক১০ আগস্ট ২০২৫
Copied!
অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ উপদেষ্টার সমালোচনা সাবেক সচিবের
‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকেরা। রাজধানী ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে। ৮ আগস্ট ২০২৫। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ জন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। অবসরপ্রাপ্ত এই সচিব বলেছেন, ওই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ অভিযোগ করেন তিনি। তবে আব্দুস সাত্তার উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।

‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে প্রশাসন ক্যাডারদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সেমিনারে প্রশাসন ক্যাডারের শীর্ষ পদের অনেক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। আমলাদের চরিত্র না হয় খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু জুলাই আন্দোলনের রক্তের ওপর দিয়ে চেয়ারে বসা অন্তত ৮ জন উপদেষ্টার সীমাহীন দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ দিতে পারব। গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ৮ উপদেষ্টার দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না’।

তিনি বলেন, কষ্ট লাগে একজন উপদেষ্টার এপিএসের অ্যাকাউন্টে ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গেলেও তাঁর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

তিনি প্রশ্ন করেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতো একটি মন্ত্রণালয় নূরজাহান বেগম চালাতে পারেন? স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় একজন অনভিজ্ঞ উপদেষ্টা দিয়ে চালানো ঠিক হচ্ছে?

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত এক বছরে দুর্নীতি না কমে বরং অতীতের চেয়ে বেড়েছে উল্লেখ করে আব্দুস সাত্তার বলেন, এক সহকারী কমিশনার (ভূমি) একটি স্কুলের জমির নামজারিতে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছেন। ঢাকার আশপাশের একজন ইউএনও একটি কারখানার লে আউট পাশ করতে ২০ লাখ টাকা চেয়েছেন।

আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমি একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে বসি। গত বছর ৫ আগস্টের পর ওই অফিসে হাজার হাজার কর্মকর্তা–কর্মচারী ভিড় করছেন। আমার বস তারেক রহমান ডেকে বললেন, “কী হচ্ছে? এরা কারা। তারা এখানে কী জন্য আসে।” আমি বলেছি, এরা সবাই বঞ্চিত। এরা গত ১৫ বছর হাসিনার আমলে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। হাসিনার পতনের পর উচ্ছ্বাসে ছুটে এসেছেন ন্যায়বিচার পেতে। উনি বলেছেন, “দলীয় অফিসে ইন–সার্ভিস কর্মকর্তারা আসা ভালো লক্ষণ নয়। আপনি তাদের অফিসে আসতে নিষেধ করে দেন।” আমি অফিসের গেটে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছি। ইন–সার্ভিস কোনো কর্মকর্তা অফিসে আসতে পারবেন না। যদি কোনো সমস্যা থাকে অফিসার্স ক্লাবে আসবেন।’

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কানিজ মওলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবির, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক শাফিউল ইসলাম।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সরকারি কর্মকমিশনের সচিব সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম।

সূচনা বক্তব্যে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর মানুষের যে প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা পূরণ হয়নি। বাতাসে কান পাতলে অনেক কথা শোনা যায়। গত ১৫ বছরে কর্মকর্তাদের অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা। অবিশ্বাসের দেয়াল ভেঙে দেওয়া।

সেমিনারে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, কর্মকর্তাদের যতই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তাতে কাজ হচ্ছে না। কারণ, সাহসের ঘাটতি। দেশে এখন যত আইন আছে তা যথেষ্ট। আইনের আর দরকার নেই। এখন দরকার আইনের প্রয়োগ।

প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব বলেন, ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রতিফলন ঘটে জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে। গত ১৬ বছরে রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভঙ্গুর করে দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে তারা কোন পথে যাবেন। এত বছর যে পথে হেঁটেছেন সেদিকে? নাকি নতুন যে পথ তৈরি হয়েছে, সে পথে যাবেন।

উল্লেখ্য, আব্দুস সাত্তার বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি।

আরও দেখুন

মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন আবারও শুরু

মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন আবারও শুরু

আজ রোববার (৩০ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিকেল ৩ টা ১৫ মিনিট থেকে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন আবার চালু করা হয়েছে।

১১ ঘণ্টা আগে

ভিসা জালিয়াতি স্বপ্ন নষ্ট ও পরিবারকে বিপর্যস্ত করে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক

ভিসা জালিয়াতি স্বপ্ন নষ্ট ও পরিবারকে বিপর্যস্ত করে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক

ভুক্তভোগীদের অনেক ক্ষেত্রে গ্যারান্টিযুক্ত ভিসা, যোগ্যতা ছাড়াই চাকরি বা অতিরিক্ত ফির বিনিময়ে দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বাস্তবে তারা পায় আর্থিক ক্ষতি, ভিসা প্রত্যাখ্যান, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পাচার ও শোষণের শিকার হয়।

৬ দিন আগে

আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে ১৭ হাজার ৯০৭ প্রবাসীর নিবন্ধন

আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে ১৭ হাজার ৯০৭ প্রবাসীর নিবন্ধন

অ্যাপ চালুর পর গতকাল রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত এসব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে বসবাস করা ১৭ হাজার ৯০৭ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৩৫৫ জন। নারী ১ হাজার ৫৫২ জন।

৬ দিন আগে